ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের আওতায় উন্নত বীজ উৎপাদন এবং উন্নয়ন প্রকল্পের ২০২২-২৩ সালে ঠাকুরগাঁওয়ের বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে সংরক্ষিত গম, বোরো ও আমন বীজ পরিবহণের টেন্ডার পাওয়ার পরেও বীজ সরবরাহে বাঁধার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) আরআরবি ট্রেড্রাসের মালিক ঠিকাদার নাজমুল হাসান রাসেল এ অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, বীজ উৎপাদন এবং উন্নয়ন কেন্দ্র (বীজ উৎপাদন) ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জের উপ-পরিচালক তাজুল ইসলাম ভূঞার সাক্ষরিত উন্মুক্ত পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি ২০২২-২৩ সালে বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে সংরক্ষিত গম, বোরো ও আমন বীজ পরিবহণ ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে একটি দরপত্র আহবান হয়। যার দরপত্র নং-০২/২০২২-২৩, যার মূল্য নির্ধারন করা হয় ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা, গেল ১০ অক্টোবর দরপত্র বিক্রয়ের শুরু করে শেষ হয় ১১ অক্টোবর দুপুর ১২ টায়। একই দিনে বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক এবং উপ-পরিচালক (বীপ্র), বীপ্রকে, বিএডিসি ঠাকুরগাঁও দপ্তরের দরপত্র বাক্সটি দরপত্রের দাতাগণের উপস্থিতিতে খোলা হয়। এতে বীজ পরিবহনের টেন্ডার পান আরআরবি ট্রেড্রাসের মালিক ঠিকাদার নাজমুল হাসান রাসেল।
গত মঙ্গলবার ( ০১ নভেম্বর) প্রকল্প পরিচালক বীজ উৎপাদন প্রকল্প, বিএডিসি, ঢাকা কাজের জন্য দর অনুমোদন পাওয়া আরআরবি ট্রেড্রাস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বীজ পরিবহনের জন্য আদেশ দেন। এরই মধ্যে বীজ সরবরাহও করেন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু নির্দেশ পাওয়ার ক’দিনের মধ্যেই কোন কারন ছাড়াই প্রকল্প পরিচালক মতিঝিল ঢাকা দেবদাস শাহা মৌখিকভাবে আরআরবি ট্রেড্রাস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বীজ পরিবহনে বন্ধের জন্য আদেশ দেন। যা অযৌতিক বলে মনে করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়রা জানান, একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পরেও কেন বীজ সরবরাহ করতে তা খতিয়ে দেখা উচিত। স্থানীয় ঠিকাদাররা বেশি রেট দিয়েছে বলে কাজ পায়নি। যিনি কম রেট দিয়েছে তিনি কাজ পেয়েছে। এতে সরকার লাভবান হয়েছেন। তারপরেও কেন বীজ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে তা প্রশাসনকে দেখা উচিত বলে মনে করেন সবাই।
আরআরবি ট্রেড্রাসের মালিক নাজমুল হাসান রাসেল জানায়, গত বুধবার (০৯ নভেম্বর) দরপত্র আহব্বান করা হলে আমি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হই। ১০ তারিখে বীজ পরিবহণের জন্য আমার কাছে গাড়ি চান কর্তৃপক্ষ। আমি দেই। বীজও সরবরাহও করি।
কিন্তু টেন্ডার পাওয়ার পর স্থানীয় কিছু ঠিকাদার উঠে পরে লেগেছে। আমি যেন কাজ করতে না পারি। কৌশল খাঁটিয়ে বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝায়। স্থানীয় ঠিকাদারদের কথা শুনে আমাকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। তবে কাজ বন্ধের লিখিত কোন কাগজ দেননি। হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেয়ায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। গত তিনদিন থেকে আমার দশটা গাড়ি ও শ্রমিকরা বসে আছে। তাদের যাবতীয় খরচ আমাকে বহন করতে হচ্ছে। শুধু আমি একাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না। চাষীরা বীজ না পেয়ে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সময় মতো যদি চাষীরা বীজ রোপণ করতে না পারে তাহলে দেশের অর্থনীতি আরো খারাপ হবে। কমিটি আমাকে কাজ দেওয়ার পরেও হঠাৎ করে আমাকে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। যদি আমাকে সুষ্ঠুভাবে করতে না দেয় তাহলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও শিবগঞ্জ বীজ উৎপাদন এবং উন্নয়ন কেন্দ্র (বীজ) এর উপপরিচালক তাজুল ইসলাম ভূঞা জানান, টেন্ডার পাওয়ার পর আরআরবি ট্রেড্রাস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেন। আবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনায় তা বন্ধ রাখা হয়েছে। কি কারণে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাই ভাল জানেন বলে জানান তিনি।
Leave a Reply