মোহাম্মদ দুদু মল্লিক শেরপুর প্রতিনিধি।
টানা ৭বছর পাঠদানের পর প্রশাসনিক ভাবে বদলী হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভালবাসার অশ্রুুজলে বিদায় জানালেন সহকারি শিক্ষক শহীদুল ইসলামকে।
ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাকাকুড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ধানশাইল গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের ছেলে শহীদুল ইসলাম রাষ্ট্র বিঙ্জানে এমএ পাশ করার পর ২০১৬সালের ২৯ জুন সহকারি শিক্ষক হিসেবে বাকাকুড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
এর পর থেকে টানা প্রায় ৭ বছর পার করেন একই বিদ্যালয়ে। গত এই ৭টি বছরে শহীদুল ইসলাম বিদ্যালযের শিক্ষার্থী সহ শিক্ষক ও এলাকাবাসী সকলের হৃদয় জয় করে নেন। শিক্ষার্থীদের মনের মণিকোঠা হয়ে উঠেন শহীদুল ইসলাম নামে এই শিক্ষকটি।
দেখতে দেখতে পেরিয়ে যায় প্রায় ৭টি বছর। সরকারি চাকুরির বিধি মোতাবেক গত ৮ নভেম্বর শহীদুল ইসলামকে বাকাকুড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই ইউনিয়নের দুপুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়।
প্রিয় শিক্ষক শহীদুল ইসলামের বদলীর খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। তাদের এ প্রিয় শিক্ষককে বিদায় দিতে গিয়ে আবেগাপ্লোত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থী সহ প্রিয় সহকর্মিরা।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশামনি, মোরছালিনা,জ্যোতি, রাজু, রুজিনা,তানজিনা,বিথী, সোয়াইব, পলাশ,মাহমুদুল,রাকিবুল, আশরাফুল, ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোবারক, আশরাফুল, নয়ন, হানিফ,আসিফ, রিয়ামনি,আকাশি, ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী খালেদা, রনি, সোলায়মান, উজাইর, মোকাম্মেল, ছাজিম সহ আরো অনেক শিক্ষার্থী এ প্রতিনিধিকে জানান, শহীদুল স্যার আমাদের শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না, তিনি আমাদের বন্ধু ও অভিভাবক ছিলেন।
তিনি আমাদের আদর, সোহাগ ও ভালবাসা দিয়ে পড়িয়েছেন। আমরা আমাদের শ্রদ্ধেয় শহীদুল স্যারের দিকনির্দেশনা আজীবন মনে রাখবো।এ ব্যাপারে সহকারি শিক্ষক শহীদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, “শিক্ষক হল মানুষ গড়ার কারিগর।
আমি শুধু একজন শিক্ষক নই, আমি প্রতিটি শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও বন্ধু। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আমার সন্তান মনে করে তাদের পাঠদান করায়।
যে কারণে শিক্ষার্থীরা আমাকে ভুলতে পারেনা। তিনি আরো জানান, “আমি যতদিন এ পেশায় আছি, ততদিন আমার প্রতি অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে সর্বদায় সচেষ্ট থাকবো, এতে কোন ব্যতয় হবেনা”।
ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বদলী হন, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
শহীদুল স্যার আমাদের সন্তানদের অতি প্রিয় ছিলেন বলেই তাঁর বিদায় বেলায় তাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনাই।
এধরণের শিক্ষক প্রতিটি বিদ্যালয়ে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানদের জয়, নিয়ন্ত্রণ হারালেন বাইডেন
Leave a Reply