নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার খামারিয়াপাড়া নিবাসী বীরপ্রতীক খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জহুরুল হক মুন্সী বীরপ্রতীক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৯.৩০ মিনিটে ৭৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন জাতির এই সূর্যসন্তান। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে ১ মেয়ে সহ নাতি-নাতনী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। রোববার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহের তারাকান্দা এলাকায় পৌঁছালে রাত ৯.৩০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে।
সোমবার সকাল-১১ ঘটিকায় চন্দ্রাবাজ (বকশিগঞ্জ) রশিদা বেগম শিক্ষা কমপ্লেক্সে এবং দুপুর ২-৩০ মিনিটে শ্রীবরদী সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে হয়।
শ্রীবরদী সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের জানাজা নামাজ এর পূর্বে বক্তব্য রাখেন শ্রীবর্দী উপজেলা চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম,নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস, অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা উপাজেলা থেকে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জানাজা নামাজের পূর্বে শ্রীবর্দী থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস এর নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সীকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অসম্মান্য বীর জহুরুল হক মুন্সী, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক দুইবার বীর প্রতীক উপাধি পেয়েছেন।
জহুরুল হক মুন্সি জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বড় হয়েছেন শ্রীবরদীর মাটিতেই। তাঁর বাবার নাম ছিল আবদুল গফুর মিয়া এবং মায়ের নাম গোলেছা খাতুন।
১১ নং সেক্টরে কামালপুর দূর্গ আক্রমণে তাঁর কৃতিত্ব ছিল অপরিসীম।তিনি কলা বিক্রেতা, জুতো সেলাইকারী মুচি, কৃষক সহ নানা ছদ্মবেশে পাক সেনাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ সহ অস্ত্র হাতে অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছেন তিনি। বকশীগঞ্জের কামালপুর এলাকায় মাইন পুঁতে গাড়ি উড়িয়ে দিয়ে তিনি পাক মেজর আইয়ুবকে হত্যা করেন।
৯ ডিসেম্বর দের হাজার পাকিস্তানি সৈন্যর জামালপুর গ্যারিসনে আত্মসমর্পণের আহ্বানসংবলিত চিঠি পৌঁছে দিতে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন জনাব জহুরুল হক মুন্সী। মুক্তি পেয়ে সেদিন রাতেই তিনি ফিরে আসেন পুরাখাসিয়া ক্যাম্পে। ১০ ডিসেম্বর ভোরে মিত্রবাহিনী জামালপুর গ্যারিসনে আক্রমণ চালায়। আহত অবস্থাতেই তিনি ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, সেই যুদ্ধে মুন্সীর হাতে জামালপুর গ্যারিসনের বহু সৈন্য নিহত হয়েছিল। সেদিন শতাধিক পাকিস্তানি সৈন্যের লাশের স্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। ২৩৫ জন সৈন্যের মৃতদেহ ও বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায় পাক সৈন্যরা, মুক্ত হয় জামালপুর। ২৩ জন আহত সৈন্য সহ ৬১ জন পাকিস্তানি বন্দি হয়।
আরও পড়ুনঃ বকশীগঞ্জে চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মানববন্ধন
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাজিদা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.