মোহাম্মদ দুদু মল্লিক শেরপুর প্রতিনিধি।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে অবস্থিত ঝিনাইগাতী মহিলা আদর্শ ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার পর গত ২০ বছরের কোন সনেই এইচএসসি বিজ্ঞান শাখায় কাম্য শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারেনি।
অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা এবং বিশেষ তদবিরে বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে এমপিওভূক্ত হওয়া দেশের অন্যান্য কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এই কলেজের বিজ্ঞান শাখায় কাম্য শিক্ষার্থী নাই কলেজটি প্রতিষ্ঠার হওয়ার পর থেকেই।
কিন্তু সরকারী কোষাগার থেকে এমপিও বাবদ প্রতি মাসে বেতন ভাতা ঠিকই তুলছেন এই কলেজের বিজ্ঞান শাখার শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জানা গেছে ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঝিনাইগাতী মহিলা আদর্শ ডিগ্রী কলেজ। ২০০২-২০০৩ শিক্ষাবর্ষে পাঠদানের অনুমতি পায় কলেজটি।
বিধান অনুযায়ী একাধারে কমপক্ষে ৩ বার এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রণ করে সন্তোষজনক ফলাফল দেখিয়ে মান্থলি পে অর্ডার বা এমপিও’র জন্য আবেদন করতে হয়।
কিন্তু এই কলেজ কোন এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রণ করার আগেই নানা অজুহাত যেমন পাহাড়ি এলাকা,নারী শিক্ষা ,অনগ্রসর এলাকা ইত্যাদি দেখিয়ে শর্ত শিথিল করে তথ্য গোপন করে পাঠদানের অনুমতি পাওয়ার মাত্র দুই বছরের মাথায় ২০০৪ সালে এমপিওভূক্ত হয়।
অথচ এই কলেজটি ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে অবস্থিত এবং প্রায় প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষারই কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই উপজেলায় আরও বেশ কয়েকটি নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে।
সেই সকল প্রতিষ্ঠান বিধান অনুযায়ী শর্তপূরণ করে কাম্য শিক্ষার্থী দেখিয়েই এমপিওভূক্ত হয়েছে।২০২১ সালে জারি করা সর্বশেষ স্কুল কলেজের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার পরিশিষ্ট খ অংশে বেতন ভাতাদি সরকারী অংশ প্রাপ্তির জন্য কাম্য শিক্ষার্থীর সংখ্যায় লেখা আছে স্নাতক পাস ( ১১শ---১৫শ) মহিলা কলেজের ক্ষেত্রে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে শহরে দুইবর্ষে নূন্যতম ২ x ৩০=৬০ জন এবং মফস্বলে দুইবর্ষে নূন্যতম ২x ২৫= ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে।
কিন্তু দেখা গেছে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে এই কলেজে দুইবর্ষ মিলে মাত্র ৭+ ৯ = ১৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এই চিত্র কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই চলামন।
২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্রের হিসেবে দেখা যায়, এই কলেজের এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের প্রতি ছাত্রের জন্য সরকারের মাসিক অর্থ খরচ হচ্ছে প্রায় ১৫,০০০/= হাজার টাকা।
যাহা বাংলাদেশের মতো দেশে উচ্চ বিলাসিতার মতো।মহিলা ডিগী কলেজে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে প্রতি বছর ২৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর বিধান থাকলেও গত তিন বছরে দেখা গেছে ২০২১ সালে ৮ জন , ২০২২ সালে ৭ জন এবং ২০২৩ সালে মাত্র ৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে এই কলেজে।
জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার ১৮.৪ ক্রমিকে আরও বলা হয়েছে এমপিওভূক্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাম্য শিক্ষার্থী/ কাম্য ফলাফলের ধারাবাহিকতা (গড়ে) রক্ষা করতে না পারলে মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত/বাতিল করতে পারবে।
এমপিও স্থগিত/বাতিলকৃত কোন প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে এমপিও’র শর্তসমূহ পূরণ করলে পুনরায় এমপিও ছাড়ের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে (যেমন শিক্ষার্থী সংখ্যা, পরীক্ষার্থী সংখ্যা এবং পাশেরকাম্য হার পুনরায় অর্জন করলে)।
এক্ষেত্রে এমপিও স্থগিতকালীন সময়ের কোন বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রাপ্ত হবেনা।দীর্ঘদিন যাবত নীতিমালা অনুযায়ী মানদন্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়া এই কলেজের বিজ্ঞান শাখায় পাঠদান, ছাত্র সংখ্যা,পাশের হার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এলাকার অনেকেই অভিযোগ করে বলেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের উদাসীনতার জন্যই কলেজের এই অবস্থা।তারা ভালোভাবে পাঠদান করলে, ছাত্রীর খোঁজখবর রাখলে, ছাত্রী সংগ্রহে মাঠ পর্যায় তদারকি করলে হয়তো কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এমন নাজুক অবস্থা হত না ।
অভিযোগ রয়েছে বছরের পর বছর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরকে ফাকি দিয়ে করা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি নবায়ন।ঝিনাইগাতী মহিলা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ( ভারপ্রাপ্ত) মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন , বিজ্ঞানে পড়াশুনার খরচ বেশি, অভিভাবকদের সচেতনতা কম, ভালো সাপোর্ট না পাওয়া ইত্যাদি কারণে মফস্বলের কলেজগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ছাত্রী কম হয়।
তিনি আরও বলেন মফস্বল এলাকায় কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে প্রতি বছর নন্যূতম ২৫ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার বিধান থাকলেও তার কলেজে তা হয় না।
আরও পড়ুন রাজিবপুরে স্কুল মিল্ক কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রতিমন্ত্রী জাকির
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাজিদা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.