নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মান্দায় মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন ফজলে রাব্বি।
গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৭নং প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন মন্ডল।
ফজলে রাব্বি প্রসাদপুর ইউনিয়নের ইনায়েতপুর (মন্ডলপাড়া) গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে এবং মান্দা কৃষি ও কারিগরি কলেজের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর ।
ফজলে রাব্বি’র আইনজীবী মো. আতিয়ার রহমান মিথুন বলেন, ফজলে রাব্বিকে আগাম জামিন দিয়েছেন আদালত। শুনানিতে ফজলে রাব্বি’র পক্ষে অংশ নেন নওগাঁ জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল খালেক এবং বিশ্বজিৎ কুমার সরকারসহ কয়েকজন আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভুয়া প্রেগন্যান্সি টেস্টের রিপোর্ট দিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ধর্ষণ মামলায় মান্দা কারিগরি ও কৃষি কলেজের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর ফজলে রাব্বিকে আটক করা হয়।
কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই অতি উৎসাহী হয়ে পুলিশ গভীর রাতে এক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে আটক করায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। এরপর ওই মিথ্যা মামলার চাঞ্চল্যকর রহস্য ফাঁস হয়।
পরবর্তীতে এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরবর্তীতে বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রসাদপুর ইউনিয়নের ইনায়েতপুর (মন্ডলপাড়া) গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ফজলে রাব্বি (২৮)।
অন্যদিকে মামলার বাদী মিতু কুসুম্বা ইউনিয়নের ছোট বেলালদহ গ্রামের (মেডিকেল মোড় এলাকার) বাসিন্দা আকবর আলী’র মেয়ে এবং ৭নং প্রসাদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খাঁন এর আপন ভাগ্নী। সম্প্রতি ফজলে রাব্বির পেয়ারা বাগানে পেয়ারা নিতে গিয়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা শুরু করে আফিমা সুলতানা মিতু (২৮) নামে ওই নারী।
প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে বর্তমানে মেডিকেল মোড় (শ্মশানঘাটি) এলাকায় একটি তিন তলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবনে বিলাশ বহুলভাবে জীবনযাপন করছে মিতু।
জানা যায়, ২০০৭ সালে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রথমে মান্দার প্রসাদপুরে শহিদুল ইসলামের ছেলে সামসুল আরেফিন ওরফে সুজনের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এরপর সেখান থেকে বিয়েবিচ্ছেদের কয়েক বছর পর নানা-মামা এবং খালার পরিচয়ে একের পর এক ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করেন মিতু।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। কারণ তার রয়েছে প্রভাবশালী আত্মীয় স্বজন। তার ব্যাপারে কেউ কিছু বললেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন।
তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পরে এসব ব্যাপারে কেউ সমঝোতা করতে চাইলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে বসে। টাকা দিতে পারলে ভালো, আর দিতে না পারলেই মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আত্মসাৎ করাই এ চক্রের কাজ।
যেপ্রতারণার ফাঁদে ফেলে মিতু একাধিক ছেলের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আর এ পর্যন্ত সে বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১০ জনের অধিক ছেলেকে অভিনব কায়দায় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার পর তাদের সবাইকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছেন।
ফজলে রাব্বিকে ফাঁসাতে যে প্রেগন্যান্সি টেস্টের রিপোর্টের কপি দেওয়া হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই আইডিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকের রেজিস্ট্রার খাতায়।
অন্যদিকে এ রিপোর্টে জাহিদ হাসান নামে যে মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ল্যাব) নাম পদবি উল্লেখ করা হয়েছে তিনি এ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকের কেউ না বলে জানিয়েছেন আইডিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকের মালিক গ্রুপের পরিচালক আমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুন ফুলগাজী প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির সদস্যরা উপজেলা চেয়ারম্যান ইউএনও ওসি ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ
Leave a Reply