আলমগীর হোসেন ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার দীর্ঘ ২ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানা বিএনপির কাউন্সিল । সামনে দলের সুদিন আসন্ন ভেবে নতুন কমিটিতে জায়গা পেতে ২ পদে ৬ জন গনসংযোগে এখন মাঠে।
এ উপলক্ষে বুধবার বিকেলে রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সমাবেশ।সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানা বিএনপির দ্বি বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারী।১০৩ সদস্য বিশিষ্ট থানা কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হয়। রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পন করা হয়। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মানিককে।ইতোমধ্যে কমিটির মেয়াদ শেষে অতিরিক্ত ২ বছর অতিক্রম করছে বর্তমান কমিটি।
নতুন কমিটি গঠন উপলক্ষে বুধবার বিকেল ৫ টায় রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সমাবেশ।উৎসব মুখর পরিবেশে সমাবেশ সম্পন্ন করতে দলীয় কার্যালয় ও সমাবেশ স্থলকে সাজানো হয়েছে ব্যানার ফেস্টুন ও সামিয়ানা দিয়ে। ।করা হয়েছে আলোকসজ্জা।৬ ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মিলন মেলায় পরিণত হবে সমাবেশস্থল।
জেলা বিএনপি চায় ,রুহিয়া থানা বিএনপির আগামী কমিটিতে গ্রহনযোগ্য নেতৃত্বকে দায়িত্ব প্রদান করতে।গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি গঠনের সকল আনুষ্ঠানিকতা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।সেই সাথে সম্ভ্রাব্য প্রার্থীরা রুহিয়া থানা এলাকার ৬ ইউনিয়নে (রুহিয়া,আখানগর ,রুহিয়া পশ্চিম,ঢোলারহাট, রাজাগাঁও, সেনুয়া ) তৃণর্মূল নেতৃবৃন্দের কাছে ছুটে যাচ্ছেন এবং গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জনের নাম শোনা যাচ্ছে।তারা হলেন- সভাপতি পদে রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান থানা বিএনপির সভাপতি মোস্তফা কামাল,বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি ,আখানগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যারিষ্টার জমির উদ্দীন সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার ,ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আনছারুল হক।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভ্রাব্য প্রার্থী- বর্তমান থানা বি্এনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মানিক,জাপার এক সময়ের প্রভাবশালী নেতা ও বিএনপিতে যোগদানকারী মো: মকবুল হোসেন এবং জেলা বিএনপির প্রয়াত সভাপতি ও রুহিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম তৈমুর রহমানের ছেলে জহিরুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
সাবেক জেলা সভাপতি তৈমুর রহমানের অকস্মাৎ মৃত্যুতে তার ছেলে জহিরুল ইসলাম রিপন দলের উপর মহল হতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহানুভূতি আদায়ে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি তার পিতার অবদানকে কাজে লাগিয়ে সভানুভুতির জায়গা থেকে সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে।
এদিকে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এলাকার মানুষের বিপদে আপদে ছুটে চলেছেন।বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের মাঝে ভরসার জায়গা তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন।
সভাপতি প্রার্থী আনছারুল হক বলেন,আমি রুহিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক নেতা।আমি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করি।বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে আমি ছুটে আসি।দলের তৃণমূলের কর্মীরা আমাকে ভরসাস্থল মনে করে । তাই তৃণমূলের দাবি বিবেচনায় দল আমাকে সভাপতির দায়িত্ব অর্পন করবে বলে আমি মনে করি।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মানিক বলেন,আমি দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতিত হয়েছি। মামলা হামলার শিকার হয়েছি এবং জেল জুলুম সহ্য করেছি।দুর্দিনে আমি দলের হাল ধরে ছিলাম।এখন সুদিন আসছে।আমি চাইবো দল আমাকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব অর্পন করে মূল্যায়ন করবে।
অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাবেক জাপা নেতা মো: মকবুল হোসেন বলেন,আমি দীর্ঘ ৩১ বছর যাবত রাজনীতি করে আসছি। বিএনপিতে যোগদানের পর একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছি।৫/৬টি মামলা খেয়েছি।
বিগত সময়ে থানা কমিটি গঠনের সময় আমি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলাম।গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর বিএনপির কতিপয় নেতার কর্মকান্ড নিয়ে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
এ অবস্থা হতে উত্তোরণে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার।আমাকে দলের দায়িত্ব দিলে আমি দলের সুশৃংখল অবস্থা ফিরিয়ে এনে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির জয়ের পাল্টা ভারি করতে যা যা করা দরকার তাই করব।
দায়িত্বশীলরা মনে করছেন দলের মহাসচিব চাইবেন সভাপতি সম্পাদক পদে পরীক্ষিত ও দুর্দিনের কান্ডারী নেতাকে দলের দায়িত্ব দিতে।
তবে র্তৃণমূলের কর্মীদের ভোটেও নির্ধারিত হতে পারে কে হবেন আগামী দিনের থানা নেতা।কে হাসবে বিজয়ের হাসি তা জানা যাবে বুধবার দলের কাউন্সিল বা পরবর্তী সময়ে।
Leave a Reply