মালিকুজ্জামান কাকাঃ এক. ব্যয় ৪৪২ কোটি টাকা, দুই. দ্রুত শেষ করার তাগিদ এই সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।
এখন জোরেসোরে আলাচনায় যশোর শহরের পালবাড়ি থেকে মণিহার পর্যন্ত চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। ২০১৯ সালে পরিকল্পনা কমিশনে পালবাড়ি-মণিহার জাতীয় মহাসড়কের বাস্তবায়ন ব্যয় ১৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকার প্রস্তাবনা দেয়া হলেও ৫ বছর পর এবার ৪৪২ কোটি টাকা প্রাকল্পিত ব্যয় ধরে অত্যাধুনিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোর।
প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়িত হলে যশোর জেলা শহরে যানজট কমবে এবং নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।৫ মার্চ দুপুর ১২ টায় যশোর কালেক্টরেট সভা কক্ষে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে যশোরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সুধীজনদের নিয়ে একটি অংশীজন সভায় প্রকল্পটি নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়।
সভায় বলা হয় যশোর শহরের অতি গুরুত্বপুর্ণ এ মহাসড়কটির সাথে রাজধানীসহ অনেক জেলা শহরের সংযোগ।
প্রতিদিন হাজার হাজার ভারি যানবাহন চলাচল করে। কাজেই যতদ্রুত সম্ভব এ মহাসড়কে ৪ লেনের কাজ শুরু করতে হবে এবং জনকল্যাণে তা দ্রুতই শেষ করতে হবে। যশোরের মানুষের চাওয়া বাস্তবায়ন থাকতে হবে প্রকল্পে। এছাড়া ভৈরব বাঁচাতে ব্রিজগুলো প্রশস্ত করার দাবি করেন অংশীজনেরা। একই সাথে পালবাড়ি দড়াটানা মণিহার রোডও প্রশস্তের প্রস্তাব করা হয় সভায়। বিশাল অংকের টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ডে জনকল্যাণের এ প্রকল্পে সবাইকে ছাড় দেয়ার আহবান জানানো হয়।
তথ্য মিলেছে, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাওয়ার পর ওই বছরের ১৮ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হয়।
অনুমোদন সাপেক্ষে গত ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রস্তুতি নেয়।তথ্যানুযায়ী যশোর জেলা শহরের পালবাড়ি-দাড়াটানা-মণিহার-মুড়লি জাতীয় মহাসড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার। সড়কটি যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পালবাড়ি থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র মণিহার সিনেমা হলের সামনে দিয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের মুড়লি মোড় গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
ইতিমধ্যে যশোর খুলনা মহাসড়কের মণিহার থেকে মুড়লি ৬ লেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।নানা জটিলতায় পালবাড়ি থেকে মণিহার পর্যন্ত ব্যস্ত ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ৪ লেন কাজ শুরু হয়নি। এবার আগামী ২০২৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এই প্রকল্পটির কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়ে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। তারই অংশ হিসেবে ৫ মার্চ যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে যশোরের মানুষের চাওয়া ও মূল্যায়ণ নিয়ে জানতে চাওয়া হয় ওই ৪ লেন কীভাবে দেখতে চায় মানুষ।সড়কটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়, যশোর শহরের প্রবেশদ্বারসহ কয়েকটি জাতীয় মহাসড়কের সংযোগ সড়ক।
স্বাধীনতার আগে নির্মিত এ সড়কটি যশোর তথা সমগ্র দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশ ও বাহির পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং প্রতিদিন হাজার হাজার ভারি যানবাহন এই সড়ক দিয়ে নড়াইল, যশোর শহর, ঝিনাইদহ, খুলনা, বাগেরহাট জেলায় যাতায়াত করে। পরবর্তীতে জাতীয় মহাসড়ক শ্রেণিতে সড়কটি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও তা জাতীয় মহাসড়কের মানে নির্মাণ করা হয়নি। যা এবার যশোরবাসী সড়কটি ৪ লেনে পেতে যাচ্ছে বলে সভায় তুলে ধরা হয়। ৭.৩০ মিটার প্রশস্ততার বিদ্যমান দুই লেন বিশিষ্ট জাতীয় মহাসড়কটি পালবাড়ি-বোর্ড অফিস-মণিহার জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণসহ এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪ লেন বিশিষ্ট ২টি সেতু পূণনির্মাণ করা হবে।
সড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণ করা হলে যশোর শহরের চার পার্শ্ববেষ্টিত রিং রোড ৪ লেনে উন্নীতকরণ সম্পন্ন হবে বলেও সভায় জানানো হয়। ৪.৪৪ কিলোমিটার দৈর্ঘের ডিপিপি অনুযায়ী যে প্রাক্কলিত মূল্য ৪৪২৮৫.০৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে তা সঠিক ব্যয় নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয় সভায়।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও যশোর পৌরসভার প্রশাসক রফিকুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর জেলা বিএপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল, দৈনিক লোকসমাজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল কবির নান্টু, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ আলম, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজজামান, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহবায়ক বিএম আকাশ ও যশোরের জেলা পর্যায়ের সরকারি অফিস প্রধানগনের অনেকে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং প্রকল্প নিয়ে বিষদ তথ্য উপস্থাপন করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া।
সভায় জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামসহ সবাই মতামত দেন ৪ লেনের প্রকল্পটি স্বচ্ছভাবে শুরু ও দ্রুত শেষ করতে হবে। জমি অধিগ্রহন, মূল্য নির্ধারণ, ব্রিজ কালভার্ট নিমাণ, বিশেষ করে এসএমভিটি লেন নির্মাণ, সার্ফেসিং, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ, বাস-বে, আরসিসি ড্রেন কাম ফুটপাথ, আরসিসি ক্রস ড্রেন, সসার ড্রেন, নিউ জার্সি বেরিয়ান, সড়ক ডিভাইডার, রক্ষাপ্রদ কাজ, রোড মার্কিং-থার্মোপ্লাস্টি ম্যাটেরিয়াল, দিক নির্দেশক এবং নির্মাণকালীন রক্ষণাবেক্ষণ সব খানেই আধুনিকায়ন ও দৃষ্টিনন্দন এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।সভায় আরো বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শহরের যানজট কমসহ উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
উপদেষ্টা:
প্রকাশক: মোছাঃ খাদিজা আক্তার
বিথী
সম্পাদক: আফজাল শরীফ
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ হারুন-অর-রশিদ
বার্তা সম্পাদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম বাহার
সহকারী বার্তা সম্পাদক: মুহাম্মাদ লিটন ইসলাম
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন জব্বারগঞ্জ বাজার,
বকশীগঞ্জ, জামালপুর
Copyright © 2025 দশানী ২৪. All rights reserved.