গাইবান্ধা থেকে মোঃ আবু জাফর মন্ডলঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সফল উদ্যোক্তা নারী সাদিনা আক্তার। তিনি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৪ নং বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর(ডিলিয়ারপাড়ার) অদম্য নারী মোছাঃ সাদিনা আক্তার।২০১৮ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিপি) হতে অন্য আরো আট দশ জনের মতো ব্যাগ তৈরির ১ বছরের প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।
প্রশিক্ষণ কালে অল্প কিছু টাকা পান তার সঙ্গে বাড়ীর হাঁস মুরগী বিক্রির আরো ১৬০০ টাকা যোগ করে ব্যাগ তৈরির জন্য পুরাতন প্লাস্টিকের বস্তা সহ ব্যাগ তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে প্রথম পর্যায়ে ব্যবসা শুরু করেন।
পরবর্তীতে বিআরডিপি হতে ২০ হাজার টাকা লোন নিয়ে সঙ্গে আরো দুজন নারী শ্রমিক নিয়ে নিজ বাড়ীতে কারখানা স্থাপন করেন এবং ব্যবসা ভালো ভাবে করতে থাকলে বিআরডিপি তাকে এক বছর পর দের লক্ষ টাকা আবারও লোন দেন।তখন থেকে সাদিনা আক্তার কে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
উদ্যোক্তা সাদিনা আক্তার বলেন বর্তমানে পুরো উপজেলা জুড়ে তার সাতশোর উপরে নারী শ্রমিক কাজ করছেন যারা সর্বনিম্ন ৩০০ হতে ৪৫০ টাকা করে আয় করে থাকেন।
এ ব্যবসায় তার কেমন আয় হয় জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বলেন ভালো প্রোডাকশন হলে প্রতিমাসে ৫০ হতে ৬০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানান। উদ্যোক্তা আরো বলেন এই আয় হতে ইতি মধ্যে ৯ লক্ষ টাকা দিয়ে হাইওয়ে সড়ক সংলগ্ন ৬ শতক জায়গা কিনেছি, এছাড়াও ২ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি ফসলি জমি বন্ধক নিয়েছি,তাছাড়া এই আয় হতে আমার একমাত্র ছেলেকে কলেজে পড়াচ্ছি ও একমাত্র মেয়েকেও স্কুলে পড়াচ্ছি।
আল্লাহর রহমতে আমরা এখন স্বচ্ছলতার সঙ্গে জীবন যাপন করছি। কারখানার তিন নারী শ্রমিক মোছাঃ মর্জিনা বেগম, মোছাঃ জোৎস্না আক্তার ও মোছাঃ মন্জুয়ারা বেগম বলেন আমরা কারখানার শুরু থেকেই প্রায় ৬ বছরের বেশি হবে এখানে কাজ করছি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি এখান থেকে যে উপার্জন করি তা আামাদের সংসারে অনেক সহযোগিতা হয়।
অদম্য নারী সাদিনা আক্তার এর স্বামী মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন আমি ইতিপূর্বে চায়ের দোকানে ও বেকারি পন্যের ডেলিভারি ম্যান হিসাবে কাজ করতাম কিন্তু এখন আর করি না আমার স্ত্রীর কারখানায় সহযোগিতা করি এখন আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে সাদিনা আক্তার বলেন সময় নষ্ট করবেন না বাড়ীতে বসে যে যে কাজ পারেন তা বানিজ্যিক ভাবে করেন সফলতা আসবেই, প্রয়োজনে প্রশিক্ষন নিন, শিখতে ও হালাল পথে উপর্জন করতে কোন ভয় কিংবা লজ্জা নেই। নারীরা আর অবহেলিত নয় নারীরা চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে।
উদ্যোক্তা আরো বলেন আমার উৎপাদিত পণ্য এখন স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানা প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে।
চাইলে আপনিও পারবেন শুধু শুরু করুন। উল্লেখ্য এই নারী উদ্যোক্তা বিভিন্ন সময়ে সরকারি ও বে- সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে স্বীকৃতি স্বরূপ একাধিক স্মারক পেয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ রাজশাহীতে সিল্ক কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে নির্যাতন থানায় অভিযোগ
Leave a Reply