যশোর প্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শা উপজেলার পল্লীতে পাওয়া টাকা আদায় নিয়ে গ্রাম্য সালিশকে কেন্দ্র করে দূর্বৃত্তরা বিএনপি অফিসসহ প্রায় ১৫/১৬টি বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও ককটেল বিষ্ফোরন ঘটিয়েছে। এতে আতঙ্কে অগ্রভুলোট গ্রামযেন পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে।
দূর্বৃত্তরা এখনো অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে গ্রামজুড়ে। এজন্য আতংক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো অগ্রভুলোট ও তার আসে পাশের গ্রাম এলাকায়।
সূত্রে জানা গেছে, গত (২৪ ফেব্রুয়ারী) সোমবার রাত ৯ টার দিকে শার্শার অগ্রভুলোট গ্রামে পাওনা টাকা নিয়ে একটি গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিসের এক পর্যায় দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে অগ্রভুলোট গ্রামের রওশন আলীর ছেলে আতিয়ার রহমান (৫৮) ও একই গ্রামের সৈয়দ আলী গাইনের ছেলে সফিকুল ইসলাম গাইন (৫৫) গুরুতর আহত হয়।
আহত দুজন গোগার আব্দুল হামিদের সমর্থক। গোগার ভুলোট গ্রামের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে শার্শা থানা পুলিশ রাতেই ঘটনা স্থলে যেয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার পর থেকে অগ্রভুলোট গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দূর্বৃত্তদের ভয়ে অগ্রভুলোট গ্রামে পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে আবারো সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে আশংকা করছে গ্রামের সাধারন মানুষ।
শার্শা থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে অগ্রভুলোট গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের বিএনপি অফিসে বাবুল হোসেন ও সফিয়ার রহমান গাইনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বসে। নালিশের এক পর্যায় বিতর্কে সংঘর্ষ বাধে।
এ সময় বিচারের মধ্যে উত্তেজিত হয়ে উপস্থিত জনগন বাবুল হোসেন ও সফিকুল ইসলামকে মারপিট করে আহত করে। এমন সংবাদ পেয়ে গোগা গ্রামের আব্দুল হামিদ সরদারের নেতৃত্বে শামিম, তোফাজ্জেল, সবুজ হোসেন, মোস্ত, আব্দুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মহাসিন, আলাউদ্দিন আলা, কবির হোসেন, সুমন হোসেন, আলোসহ প্রায় ৫০/৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে অগ্রভুঅেট গ্রামে হামলা করে।
এ সময় দূর্বৃত্তরা আচমকা অগ্রভুলোট গ্রামের বিএনপি অফিসে হামলা করে অফিসের প্রায় শতাধিক চেয়ার, আসবাবপত্র ও শহিদ জিয়া, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, অনিন্দ ইসলাম অমিত, হাসান জহির ও নূরুজ্জামান লিটনের ছবিসহ অন্যন্য নেতাদের ছবি ভাংচুর করে। এ সময় দূর্বৃত্তরা প্রায় ২৫/৩০টির বেশি ককটেল বিষ্ফোরন ঘটায়।
হামলায় নেতৃত্বে থাকা তোফাজ্জেল, সবুজ হোসেন, মোস্ত, আব্দুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মহাসিন, আলাউদ্দিন আলা, কবির হোসেন, সুমন হোসেন, আলেসহ অনেকে আওয়ামীলীগের দোসর ও ক্যাডার হিসেবে চিহ্নিত।
এ সময় দূর্বৃত্তরা অগ্রভুলোট গ্রামের বিএনপি কর্মি হযরত আলীর ছেলে খায়রুল ইসলাম(৩৫), গোলাম হোসেনের ছেলে মিকাইল হোসেন (৩৫), মাহাবুরের ছেলে মরিফুল (২৮), আলমগীরহোসেন (৩৫), মজিবর রহমানের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), রুত আলীর ছেলে কবিরুল হোসেন (৫০), জামাল হোসেনের ছেলে বিল্লাল হোসেন (৪৫), ইমাম সরদারের ছেলে মফিজুর (৪৫) নিয়ামত আলী (৩৮) খোদা বক্সের ছেলে বাবুল হোসেন (৪০)সহ আরও কয়েক জনের বাড়িতে হামলা ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে।
এ সময় দূর্বৃত্তরা মিকাইল হোসেনের বাড়ি থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা লুট করে ও আলমগীর হোসেনর বাড়ির গেটে গুলি করে তার বৃদ্ধ মাকে মারপিট করে। এ ছাড়া হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের ডাক্তার মাহাবুরের বাড়িতেও গুলি করে আতংক সৃষ্টি করে।
এ ব্যাপারে শার্শা থানা বিএনপি’র সদস্য সরোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, ২৪ফেব্রুয়ারি রাতে অগ্রভুলোট গ্রামে আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একদল দূর্বৃত্তরা অগ্রভুলোট গ্রামে হামলা করে বিএনপি অফিস, শতাধিক চেয়ার ও ১৫/২০ জনের বাড়ি ভাংচুর করেছে। দূর্বৃত্তরা এ সময় গুলি করেছে, একাধিক ককটেল বিষ্ফোরন ঘটিয়েছে। যে কারনে ভুলোট গ্রামে আতংক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে শার্শা থানা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নূরুজ্জামান লিটন বলেন, ঘটনা শুনেছি। অপরাধী যেই হোক তদন্ত করে দলীয় ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, গোগা ইউনিয়নের অগ্রভুলোট গ্রামে গ্রাম্য সালিশ নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর শুনে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছে।
বিসয়টির সমাধানে বিএনপি’র উপরি মহল ও প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
আরও পড়ুন খাগড়াছড়িতে চার সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে “বিএমইউজে” চট্টগ্রাম জেলায় প্রতিবাদ সভা
Leave a Reply