এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ–আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী একদল শিক্ষার্থী বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রথমে তাকে সাবেক পতীত স্বৈরাচার সরকারের দোসর ও বিভিন্ন দূর্নীতির হোতা অভিযোগ এনে অবরুদ্ধ করে রাখলে ডবলমুরিং থানা পুলিশের একটি টিম গিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশ তাকে দুনীতি দমন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশ বেতারে যোগদানের আগে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বাংলাদেশ বেতার ভবনে নিজ কার্যালয়ে মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে অবরুদ্ধ করে রাখেন একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবি শরীফ মাহমুদ ফ্যাসিবাদের দোসর এবং গত বছরের ৪ আগস্ট অপুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে কারফিউ জারি হয়েছিল দেশে। তাই তাকে আটক করতে হবে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ–আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে আটকে রেখেছে সংবাদ পেরে আমরা ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ পাঠিয়ে প্রথমে রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপুর্ন স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করি এবং পরিস্থিতির বাস্তবতা অনুধাবনের চেষ্টা করি এবং বেতারের এ কর্মকর্তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসি। অনুসন্ধানে জেনেছি, ওই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা রয়েছে। আমরা দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শানুযায়ী দুদুকের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
জানা গেছে, মো. শরীফ মাহমুদ অপু কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ণমতি গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার জয়নাল আবেদিনের ছেলে। তার বাবা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। শরীফ মাহমুদ অপু তেজগাঁও–হাতিরঝিল থেকে নির্বাচিত এমপি আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায় দশ বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন।
চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি শরীফ মাহমুদ অপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শরীফ মাহমুদ অপু ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া এ তথ্যে সংশ্লিষ্ট ধারায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অভিযুক্ত মো. শরীফ মাহমুদ অপু সরকারি দায়িত্ব পালন করেছিলেন দাবি করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলাম না। আমি ছিলাম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা। সেই হিসেবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আমি পালন করেছি। এখন যিনি মন্ত্রণালয়ে আছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা তিনিও পালন করছেন তার দায়িত্ব। আমি না থাকলে তখন আরেকজন থাকতো। এটা কেউ না কেউ দায়িত্ব পালন করবেই।
সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ গতরাতে মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপুকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে। আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। দুদক তাকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যাবে বলেও পুলিশ কমিশনার জানান।
আরও পড়ুনঃ নরসিংদীর চাঁনপুরে দুই গ্রুপের সমর্থকদের সংঘর্ষে, গুলিবিদ্ধ-১, নিহত-২
Leave a Reply