মালিকুজ্জামান কাকাঃ ঠিক ইউ মুহূর্তে যশোর জুড়ে পকেটমার, ছিনতাইকারী, ঠগ জোচ্চর এবং চোরেররমরমা উৎপাত চলছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে শুরু করে মহল্লায়, গ্রামে চলছে তাদের অপকর্ম। কিছুতেই জনগণের ওদের হাত থেকে মুক্তি মিলছে না।
যশোর শহরের গাড়িখানা রোডের মসজিদ গলিতে সাতসকালে একসাথে আটটি দোকানে চুরির হয়েছে। বুধবার ভোর ছয়টা থেকে সাতটা দশের মধ্যে চোরেরা এসব দোকানে হানা দেয়। এতে কয়েকটি দোকান থেকে নগদ টাকা লুট হয়েছে। অন্য গুলোতে তছনছ করে পালিয়ে যায় চোরচক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, তারা রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তাদের দোকানে চুরি হয়েছে। এসে দেখেন, প্রতিটি দোকানের শাটার আংশিক ভাঙা, ক্যাশবাক্স ভাঙা, এবং টাকা উধাও। দোকানগুলোর বিভিন্ন মালামালও এলোমেলো করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে চায়না বাটারফ্লাই দোকানের মালিক জাকির হোসেন কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, চায়না বাটারফ্লাই থেকে দেড় লাখ টাকা, রাব্বী প্রিন্টার্স অ্যান্ড স্টেশনারী থেকে ১০ হাজার টাকা, ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস থেকে ৭০ হাজার টাকা, জনি স্টেশনারী থেকে ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। এছাড়াও এসবি পেপার, হাফিজ পেপার, সাহিদ কম্পিউটার অ্যান্ড প্রিন্টার্স, ইউ এ এন্টারপ্রাইজে চোরের হানা দেয়, তবে এসব দোকান থেকে কোনো অর্থ বা মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়নি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মূলত মসজিদ গলির মডেল মার্কেটে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই মার্কেটের সামনের কলবসিবল গেটে তালা মারা ছিল, ফলে চোরেরা পেছন দিক থেকে প্রবেশ করে আটটি দোকানে চুরি করে। সামনের দিক থেকে কেউ বিষয়টি বুঝতে পারেনি। পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। প্রশাসন অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।
বাসযাত্রীদের প্রতিদিনই টাকাগহনা মোবাইল খোয়া যাচ্ছে বাস ট্রেন থেকে। তবে পুরুষের থেকে নারীদের খোয়া যাওয়ার পরিমান বেশি। যশোর বেনাপোল রোড, যশোর সাতক্ষীরা রুট, যশোর-চৌগাছা, মনিরামপুর কেশবপুর চুকনগর রুটে এই মুহূর্তে পকেট মার ও বাটপারদের দুরন্ত অপকর্ম চলছে।
বেনাপোল টু খুলনা ট্রেন থেকে যশোর শহরের ৫নং আদর্শপাড়ারআয়ুবের স্ত্রীর মোবাইল, টাকা পকেট মার নিয়ে গেছে। একই রুটের বাস থেকে জামানের টাকা পকেট মার দুই দিন আগে সাবাড় করেছে। খড়কির তপনের মোবাইল সেট নিয়ে গেছে চোর রাতে। থানায় অভিযোগ করলেও সেট উদ্ধার হয়নি। সেলিমের মোটর ভ্যান চুরি হয়েছে। সি সি ক্যামেরায় দেখা যায় চোর তিনজন মোটর সাইকেলে এসে দুইজন গার্ড দিচ্ছে আর একজন তালা ভেঙে ভ্যান চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে চোর ধরা পড়েনি।
শার্সা উপজেলার গ্রাম থেকে প্রতিদিন গরু ছাগল ও হাঁস মুরগী চুরি হচ্ছে। ঝিকরগাছা, চৌগাছা, সদর ও বাঘার পাড়ার বিভিন্ন গ্রামে প্রতিরাতেই চুরি হচ্ছে।
একই সাথে শুরু হয়েছে ছিনতাই। সন্ধ্যার পর শহরতলি0 গ্রামের রাস্তায় পথচারী একা চলাচল করতে পারছে না। ইজিবাইক, মোটর ভ্যান রিক্সাপ্রতি দিনই ছিনতাই হচ্ছে।
মনের দুঃখে পথচারী বাবু মিয়া তাই বললেন-
‘চোর বাটপার বাংলা জুড়ে ওরা হচ্ছে মামা
এসে গেছে ঈদ, ওদের কি দরকার নেই জামা!
ভুক্তভুগি ওরে বাবা করবে কি করে দাও ক্ষমা
টাকা পয়সা হারিয়ে পাগল বনে দাও ওহে হামা।”
Leave a Reply